Friday || April 26, 2024 Online Tech News Portal
img

করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু

Posted on : 2020-04-20 04:27:53

News Source : যুগান্তর, ২০ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু

দেশের ১০ জেলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরিশালে এক শিশু, যুবক ও বৃদ্ধ, গাইবান্ধায় এক শ্রমিক ও কৃষক, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দুই ব্যক্তি, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও যশোরের বেনাপোলে দুই শিশু, খুলনা ও নোয়াখালীর চাটখিলে দুই নারী, খাগড়াছড়িতে পোশাক শ্রমিক, বগুড়ায় বৃদ্ধ ও চট্টগ্রামে এক ব্যক্তি মারা যান। বরিশালে মারা যাওয়া শিশুর লাশের পাশে কেউ না আসায় দাফন করেছে পুলিশ।

এ নিয়ে ৩০ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনে করোনা উপসর্গ নিয়ে সারা দেশে মারা গেলেন ২০৫ জন। যুগান্তর রিপোর্ট, ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বরিশাল ও মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) : করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া শিশুর জানাজা ও দাফন কাজে যখন কেউ এগিয়ে আসছিল না, তখন শনিবার তা সম্পন্ন করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা। রোববার পুলিশের মিডিয়া সেল এ তথ্য দেয়। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানাধীন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিস্টান কলোনি সংলগ্ন ১ বছর ৬ মাসের ওই শিশুটি মারা যায়। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের নির্দেশে কোতোয়ালি থানা কর্তৃক ওই শিশুর জানাজা ও দাফন করা হয়। এদিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার সৌলা এলাকার এক যুবক রোববার সকাল পৌনে ৮টায় মারা যান। এর আগে শনিবার সকাল ১০টার দিকে পিরোজপুরের কাউখালীর বিয়ারঝুড়ি এলাকার ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ মারা যান।

এ ছাড়া বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত তিন চিকিৎসকের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বরিশাল জেলায় ২০ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। শনিবার শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গাইবান্ধা : গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরত আসা এক শ্রমিক রোববার নিজ বাড়িতে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা নিয়ে মারা গেছেন। এছাড়া সদর উপজেলা গিদারী ইউনিয়নের এক কৃষক করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানান, মৃত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাদের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, একটি বিশেষায়িত টিম গিয়ে লাশ দাফন করে।

সোনারগাঁ ও বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) : সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া গোহাট্টা গ্রামে শনিবার গভীর রাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানিহাতি গ্রামে। তিনি একটি নিট অ্যান্ড ডায়িং কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা নমুনা সংগ্রহের পর রোববার সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবী, পুলিশ ও সাংবাদিক ওই ব্যক্তির জানাজা শেষে লাশ দাফন করেন। এ ছাড়া উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চেলারচর গ্রামে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা এক ব্যক্তি শনিবার দুপুরে মারা যান।

গোপালগঞ্জ : টুঙ্গিপাড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক মেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলার গিমাডাঙ্গা উত্তরপাড়ায় নিজ বাড়িতে শিশুটি মারা যায়। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ওই শিশু ও তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

বেনাপোল (যশোর) : বেনাপোলে জ্বর-সর্দিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোর রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে বাড়িটি লকডাউন করে প্রশাসন।

খুলনা : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে হাসপাতালে ফ্লু কর্নার ওয়ার্ডে ওই নারীর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ওই নারীর নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে।

নোয়াখালী ও চাটখিল : চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে শনিবার এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি শ্বাসকষ্ট, কাশি, সর্দি ও ডায়াবেটিসে ভুগে মারা যান।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির গুগড়াছড়িতে জ্বর নিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রোববার সকালে চট্টগ্রাম ফেরত ওই পোশাক শ্রমিক মারা যান। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফিরে তিনি স্থানীয় একেপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোয়ারান্টিনে ছিলেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন নূপুর কান্তি দাশ জানান, আমরা তার নমুনা সংগ্রহ করেছি।

বগুড়া : শাজাহানপুরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। শনিবার রাতে উপজেলার বেতগাড়ির একটি দোকান ঘরে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা রাতেই তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। শনিবার বিকালে বেশি অসুস্থ হলে হটলাইন ৯৯৯ ও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে শাজাহানপুর থানায় ফোন করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক আসেন। তার আগেই ওই বৃদ্ধ মারা যান।

চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে থাকা ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রোববার সাকালে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন বিআইটিআইডির পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল হাসান চৌধুরী। মারা যাওয়া ব্যক্তির বাড়ি চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকায়।

জাতীয়