Saturday || April 20, 2024 Online Tech News Portal
img

কোভিড ১৯-এর সম্ভাবনাময় যত চিকিৎসা

Posted on : 2020-05-12 04:15:03

News Source : আমাদের সময়, ১২ মে ২০২০ ০০:০০ | আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৯:১১

কোভিড ১৯-এর সম্ভাবনাময় যত চিকিৎসা

বিশ্বজুড়ে নোভেল করোনা ভাইরাস মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ রোগের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য কাজ করে চলেছেন, তবে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাস দমনে কার্যকর প্রমাণিত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা যায়নি। এর অর্থ এই নয় যে, কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ রোগের সম্ভাবনাময় যত চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন-আজহারুল ইসলাম অভি

রেমডেসিভির : রেমডেসিভির মূলত ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধ, তবে এটি এখন কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের কোভিড-১৯ রোগ নিরাময়ে সহায়ক হিসেবে এ ওষুধটিকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বলে অভিহিত করেছে। ওষুধটির নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলেড সায়েন্সেস। এর ক্লিনিক্যাল টেস্টের ফলাফল ইতিবাচক দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা চিকিৎসায় ইতোমধ্যে রেমডেসিভির ব্যবহার শুরু করা হয়েছে।

অ্যাভিগান : অ্যাভিগান হচ্ছে একটি ওষুধ, যা ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। নোভেল করোনা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দক্ষতা পরীক্ষা করার সময় এটি অন্যান্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। ওষুধটি নিয়ে বর্তমানে প্রচুর পরীক্ষা চলছে এবং ফলাফলগুলো শিগগিরই পাওয়া যাবে। এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা হলো, ওষুধটি কোভিড-১৯ রোগীদের দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করেছিল এবং তাদের কিছু লক্ষণ হ্রাস করেছে।

ক্যালেট্রা : ক্যালেট্রা হলো এইডসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ এবং এটি নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রসারকে ধীর করতে সহায়তা করার আশা দেখাচ্ছে। যদিও এর প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলগুলো তেমন সহায়ক বলে মনে হয়নি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তারা আরেকটি বড় ধরনের গবেষণা চালাবে যেখানে এই ওষুধ অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং সর্বোপরি এটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।

অ্যাকটেমরা ও কেভজারা : এ ওষুধ দুটি আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং এখন কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তাদের সুস্থ হতে সাহায্য করবে এই প্রত্যাশায়। ওষুধ দুটি রোগীর ফুসফুসের অতিরিক্ত প্রদাহ বন্ধ করে ফুসফুসকে সচল রাখে, যা ভাইরাসটিকে স্থির করতে সহায়ক হতে পারে। উভয় ওষুধের ক্লিনিক্যাল টেস্ট চলছে এবং শিগগিরই এর কার্যকারিতা নিয়ে নির্দিষ্ট উত্তর পাওয়া যাবে।

কনভালসেন্ট প্লাজমা : এ চিকিৎসা পদ্ধতিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত যেসব ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের রক্তের প্লাজমা বা রক্তরস ব্যবহার করে আক্রান্ত অন্য রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। রক্তের এই প্লাজমায় অ্যান্টিবডি রয়েছে, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। ফলে অন্য অসুস্থ রোগীদের লড়াই করতে সক্ষম করতে পারে। কেননা করোনা ভাইরাস আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়া ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় আর সেটাই অন্য রোগীর শরীরে থাকা ভাইরাসটি নির্মূল করতে পারে। এই পদ্ধতির বেশ কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ইতোমধ্যে করা হয়েছিল এবং ইতিবাচক ফলাফল দেখিয়েছে।

ক্লোরোকুইন : ক্লোরোকুইন হলো ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় বহু প্রচলিত এবং বহু পুরনো একটি ওষুধ, যা কোভিড-১৯ চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের বড় আশা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ওষুধের সম্ভাবনা থাকার কারণে বেশ কয়েকবার এটি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রচুর পরিমাণে ওষুধটি মজুদ করেছে। এই ওষুধের ‘হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন’ নামক একটি নির্দিষ্ট সংস্করণও রয়েছে। উভয় ওষুধের কোনোটির কাছেই এখনো ক্লিনিক্যাল প্রমাণ নেই যে, নোভেল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সহায়তা করতে পারে। ওষুধগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে আরও টেস্ট প্রয়োজন হবে।

আন্তর্জাতিক