Thursday || April 18, 2024 Online Tech News Portal
img

যে কারণে নিউইয়র্কে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেশি

Posted on : 2020-05-07 07:11:20

News Source : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৭ মে, ২০২০ ১১:২৬

যে কারণে নিউইয়র্কে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেশি

নিউইয়র্ক সিটিসহ সমগ্র স্টেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ স্টেটে ৬ মে বুধবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মারা গেছে মোট ৭৪৭৯৯ জন। এরমধ্যে কেবলমাত্র নিউইয়র্ক স্টেটের রয়েছেন ২৫৯৫৬ জন। অর্থাৎ মোট মৃত্যুর ৩২% হলেন নিউইয়র্কের।

কেন এমন ঘটছে তার হদিস উদঘাটন করতে গিয়ে স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো জানতে সক্ষম হয়েছেন যে, ‘হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় আসা রোগীর ৬৬% বাসায় ছিলেন। তারা যথাযথ চিকিৎসা নেননি বা করোনা ভাইরাসের নৃশংসতাকে আমলে নিতে চাননি। এদের বয়স ৫১ বছরের উর্দ্ধে এবং তারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং এ্যাজমায় ভোগছিলেন আগে থেকেই।’

বুধবার নিয়মিত প্রেসব্রিফিংকালে গভর্নর উল্লেখ করেন, ‘রোগীদের ১৮% এসেছেন নার্সিং হোম, কারাগার থেকে ১% এরও কম, গৃহহারা ২%, অন্য গ্রুপ থেকে আরো ২% । ৬৬% ছিলেন বাসায়। এটি খুবই দু:খজনক ঘটনা। বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি তা জেনে।’ নিউইয়র্ক স্টেটের ১১৩টি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ১৩০০ রোগির অংশগ্রহণে ৩দিনব্যাপী পরিচালিত এক জরিপে উদ্বেগজনক এ তথ্য উদঘাটিত হয় বলেও গভর্নর জানান।
টানা ৪৬ দিন চলছে নিউইয়র্ক স্টেটে লকডাউনের। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ব্যাপারটি এখন আর কারো অজানা নেই। এবং এটি যে নিজেকে এবং পরিবারসহ গোপা সমাজকে করোনা থেকে রক্ষায় নেয়ামকের ভূমিকা পালন করছে সেটিও ইতিমধ্যেই সকলে নিশ্চিত হয়েছেন। একইভাবে বাসার বাইরে বের হলেই মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ বহাল রয়েছে। এমনি অবস্থায়ও প্রতি সপ্তাহে ২০ হাজার মানুষের বেশি হাসপাতালে আসছে করোনাভাইরাসের টেস্টিংয়ের জন্যে। গত সপ্তাহেও ৫ হাজারের অধিক রোগী হাসপাতালে এসেছেন। এরা কারা-প্রশ্ন স্টেট গভর্নরের। এমন কৌতুহলের অবসানেই চালানো হয় ঐ জরিপ। উপরোক্ত তথ্য উদঘাটন ছাড়াও গভর্নর নিশ্চিত হয়েছেন যে, প্রতি ৫ জন রোগীর ৪ জনই বেকার অথবা অবসর জীবন-যাপন করছিলেন। মাত্র ১৭% ছিলেন কর্মজীবী। গভর্নর বলেন, আমি ভাবছিলাম যে, নার্স, ডাক্তার, রেল-বাসের ড্রাইভার/শ্রমিকসহ দমকল বাহিনী অথবা পুলিশ বাহিনীর লোকই বেশী সংক্রমিত হয়েছেন এবং মৃতদের মধ্যেও তাদের সংখ্যাই অধিক হবে। কারণ, তারাইতো সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে আসছেন। কিন্তু সে ধারণা সঠিক ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের সিংহভাগই বয়স্ক ছিলেন। প্রতি ৫ জনের ৩ জনেরই বয়স ৬০ বছরের অধিক।
জরিপ অনুযায়ী, এই স্টেটের মোট রোগীর ৫৭% ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির। মোট রোগীর ৪৫% হচ্ছেন আফ্রিকান-আমেরিকান অথবা ল্যাটিনো। এসব রোগীর মাত্র ৩% হাসপাতালে এসেছেন বাস অথবা সাবওয়ে-তে। ৯৬% রোগীই আগে থেকে জটিল কিছু রোগে ভোগছিলেন। রোগীদের ৩৭% ছিলেন অবসর জীবন-যাপনকারি এবং ৪৬% ছিলেন বেকার। ‘এসব তথ্যে সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, তারা কর্মরত ছিলেন না, সিটির বাইরেও যাননি, অধিকাংশই ম্যানহাটান, কুইন্স, ব্রুকলীন আর ব্রঙ্কস বরোতে বাস করছিলেন’-বলেন স্টেট গভর্নর।
জোন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৬ মে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিউইয়র্ক স্টেটে করোনায় মারা গেছে ২৫৯৫৬ । আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৯১।

আন্তর্জাতিক