Posted on : 2020-04-30 04:20:31
News Source : আমাদের সময়, ৩০ এপ্রিল ২০২০ ০০:০০
ভারতের সরকারি তথ্যমতে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৭৮৭ এবং মারা গেছে ১০০৮ জন। ১৩০ কোটি জনগণের দেশটিতে ‘এত কম’ মৃত্যু নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। গতকাল এক প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়, সরকারের দেওয়া সংখ্যায় কি গলদ আছে?
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশটিতে রবিবার পর্যন্ত সোয়া ছয় লাখের বেশি মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার দিক থেকে প্রশংসিত দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে বেশি।
যে কোনো দেশ কতটা আগ্রাসীভাবে পরীক্ষা করছে তা যখন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মূল্যায়ন করেন তখন তারা শুধু মোট সংখ্যায় সীমাবদ্ধ না থেকে পরীক্ষার ইতিবাচক হারের দিকেও নজর দেন। পরীক্ষায় যদি বড় অংশ পজিটিভ ফল আসে তা হলে তারা ধরে নেন যে কেবল গুরুতরÑ যেমন হাসপাতালে ভর্তিÑ রোগীদের ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান সিএনএনকে বলেন, প্রতিটি পজিটিভ ফলের বিপরীতে কমপক্ষে ১০টি নেগেটিভ ফল থাকলে সেটাকে মুটামুটি ভালো মানদণ্ড হিসেবে ধরা যায়।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশটিতে এখনো পর্যন্ত মোট পরীক্ষার মাত্র ৪ শতাংশের ক্ষেত্রে ফল পজিটিভ এসেছে, যা এই মানদণ্ডের অনেক নিচে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএইচইউ) তথ্য অনুযায়ী এটা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়ও অনেক কম, যেখানে পজিটিভ প্রায় ১৭ শতাংশ। ভারতের অবস্থা যুক্তরাজ্যের তুলনায়ও কম, যেখানে সরকারি হিসাবে পজিটিভ প্রায় ২১ শতাংশ।
আরও একটি প্রয়োজনীয় মানদ- হতে পারে মৃত্যুহারের অনুপাত। ভারতে মোট আক্রান্তের প্রায় ৩ শতাংশ মারা গেছেন, যেখানে জেএইচইউর হিসাবে ইতালি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে ১৩ শতাংশের বেশি মারা গেছেন। তাই এটা ধরে নেওয়া যায় যে, ভারত সবচেয়ে গুরুতর উপসর্গসহ ব্যক্তিদের বাইরে অন্যদেরও পরীক্ষা করছে।
তবে এ ক্ষেত্রে ভারতের মাথাপিছু পরীক্ষার হার অত্যন্ত কম। প্রতি লাখে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ হাজার ১৭৫ ও যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৭৪০ জনের বিপরীতে দেশটিতে মাত্র ৪৮ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে।
মাসখানেক আগেও মনে হচ্ছিল করোনা ভাইরাসের মহামারীতে ভারতের পরিস্থিতি হয়তো ভয়াবহ হবে; লাখে লাখে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিচ্ছিলেন।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ দেশের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিতে পারে হুশিয়ারি দিয়ে ভারতকে তা মোকাবিলার আটঘাট বেঁধে নামারও পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তাদের আশঙ্কা ছিল, ভাইরাসটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে ভারতের বস্তিবাসীদের মধ্যে, যেখানে গাদাগাদি করে থাকা মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্য সুবিধাই পায় না।